সংবাদদাতা:
মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা মোঃ জিয়াবুল হক হত্যা মামলার ১নং আসামী চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহ মহামান্য হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছে বলে প্রচার করলেও মহেশখালী থানা এবং নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তিনি হাইকোর্ট জামিন নিয়েছেন প্রচার করে কক্সবাজার হোটেল সাগর গাঁওয়ে বসে তার সমর্থকদের উস্কানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একই সাথে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে শোডাউন করে মাতারবাড়ী যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তথ্য মতে, গত ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান শেষ করে মাতারবাড়ির নতুনবাজার থেকে বাড়ী যাওয়ার পথে উৎপেতে থাকা সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি কোপায় যুবলীগের নেতা মোঃ জিয়াবুল হককে। ২০টির বেশি কোপানো হয় তাকে। ওই দিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মাতারবাড়ির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহ পরিকল্পনা ও ইন্ধনে এই হত্যাকান্ড ঘটে বলে দাবি করেন নিহতের পরিবার। এই খুনের ঘটনায় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহকে প্রধান আসামী করে নিহতের স্ত্রী বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে ১নং আসামী চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহ নিজেকে নির্দোষ দাবী করেন। কিন্তু তিনি নিহত জিয়াবুলের জানাযা কিংবা নিহত জিয়াবুলের পরিবারকে সমবেদনা জানাননি।

এদিকে সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মনভাবে নিহত জিয়াবুলের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এখনো পর্যন্ত নিহত জিয়াবুলের ফাতেহা অনুষ্ঠিত হয়নি। ব্যক্তিগত জীবনে জিয়াবুল ২ ছেলে ১ মেয়ে, ১স্ত্রী এবং স্ত্রীর গর্ভে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।

নিহত জিয়াবুলের হত্যাকারী হিসাবে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহকে ১নং আসামী করে ২০ জন এবং অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনকে আসামী করে নিহত জিয়াবুলের স্ত্রী ময়না মুক্তা বাদী হয়ে মহেশখালী থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং- ০৮, জি,আর ১৯৫/১৮ইং। তারিখ- ১৮/০৮/২০১৮ইং। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মহেশখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত একেএম শফিকুল আলম চৌধুরী।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, মহামান্য হাই কোর্ট থেকে জামিন লাভ করে হত্যা মামলার ১নং আসামী যদি ফুলের মালা গলায় দিয়ে এলাকায় শোডাউন করলে এলাকায় আসামীদের দ্বারা আবারোও আইন শৃংখলার বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে সচেতন মহলের অভিমত।

সরকারের মেঘা প্রকল্প মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পন্ন হতে যাওয়া শান্তিপূর্ণ মাতারবাড়ী ইউনিয়নের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি শান্তি রাখতে হত্যা মামলার আসামীদের শোডাউন নিষিদ্ধ রাখতে প্রশাসনের প্রতি জোর আবেদন জানান এলাকাবাসী।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মহেশখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক ওসি তদন্ত একেএম শফিকুল আলম চৌধুরীর জানান- ঘটনার দিন থেকে ওই এলাকায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং ঘটনার সাথে জড়িত ৮ জনকে গ্রেফতার পূর্বক জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ১নং আসামী চেয়ারম্যানের জামিনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান জামিন সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র থানায় আসেনি। সুতরাং এই বিষয়ে অবগত নয় বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান।

নিহত জিয়াবুলের পরিবারের লোকজন আসামীদের হুমকি ধমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে সুষ্ট তদন্ত পূর্বক যুবলীগ নেতা জিয়াবুলের হত্যাকারীদের গ্রেফতার পূর্বক ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেছে জিয়াবুলের পরিবার।